ফেসবুক গ্রুপে হরেক ব্যক্তির মন্তব্য এড়িয়ে চলুন, বিপদ আছে সেখানেই
অর্বিট ডেস্ক- বদলাচ্ছে গতি বদলাচ্ছে সময়, বদলাচ্ছে অপরাধের ধরণ। আর যাঁরা অপরাধের শিকার হচ্ছেন, তাঁরা আদৌ জানতে পারছেন না, যে তাঁরা অপরাধের শিকার।
ঘটনা তাহলে খুলে বলা যাক। রোশনি দাশগুপ্ত (পরিবর্তিত নাম) একটি ফেসবুক ভ্রমণ গ্রুপে যুক্ত আছেন। সেই গ্রুপেই হিমাচল বেড়ানোর প্ল্যান চেয়েছিলেন সদস্যদের কাছে। কমেন্টবক্সে অনেকেই সাহায্য করেছিলেন। প্ল্যানের পাশাপাশি হোটেল এবং গাড়িরও সাজেশন দিয়েছিলেন অনেকে।
অগত্যা হোটেল ও গাড়ি চালকের ভূয়সী প্রশংসা পাওয়ার পর পরিকল্পনা করে বেরিয়ে পড়েছিলেন রোশনি দাশগুপ্ত, সঙ্গে আরও তিন মহিলা বান্ধবী। প্রায় পাঁচ দিনের সফর পরিকল্পনায় কারও কোনও অসুবিধা হয়নি, ত্রুটিও হয়নি। হোটেল কর্তৃপক্ষের ব্যবহার থেকে পুরো সফর ছিল অতুলনীয়।
পুরো সফরের অভিজ্ঞতাসহ গ্রুপে শেয়ার করা হয়, যথারীতি প্রশংসা ও প্রশংসায় ভরে ওঠে কমেন্টবক্স। কিন্তু গোল বাধল অন্য জায়গায়। ঠিক কয়েক দিন বাদে রোশনিকে এক বন্ধু জানায়, তার কিছু আপত্তিকর ছবি বাইরে বেরিয়েছে।
ঘটনা শোনার পরেই ভয়, উতকণ্ঠা, ভীতি চেপে ধরে। ভিডিও দেখার পর বোঝা যায়, শুধু তার নয়, আরও তিন পরিচিত বন্ধুর ভিডিও রয়েছে। বছর খানেক আগে এমনই একটি ঘটনা নজরে আসে। সেখানে ঘটনা ঘটেছিল একটি দম্পতির সঙ্গে। বিষয়টি ধরা পড়ার পরেই পুলিশে মামলা রুজু করা হয়। কিন্তু সমস্যা অন্য জায়গায়।
আইনজীবী শঙ্খ বসু জানান, প্রথম কথা হল, এই ধরণের ঘটনা ঘটলে, অনেকেই পুলিশি ঝামেলা এড়িয়ে যান। ফলে অপরাধীরা বুক ফুলিয়ে ঘুরতে থাকে। দ্বিতীয় হল, এই সোশাল মিডিয়ার দৌলতে অনেকের সব জানি, সব বুঝি মনোভাব। কারণ হোটেল, গাড়ি বা যে কোনও প্রোডাক্ট বা পরিষেবা রিভিউ দেওয়ার জন্য সামান্য কতগুলি বিধি মানতে হয়, কতজন সেগুলো মানে। অথচ তারা এসব না জেনে এক্সপার্ট কমেন্ট করে। আর অনেকে ব্যক্তিগত মন্তব্যকে এক্সপার্ট কমেন্ট হিসেবে গেলে।
কিন্তু এই সমস্যা থেকে বেরোনোর উপায়?
শঙ্খবাবুর দাবি, আসলে বহু হোটেল আছে, যেখানে অধিকাংশ কর্মীদের পর্যাপ্ত মাইনে দেওয়া হয় না। বলেই দেওয়া হয়, টিপ্সের উপর চলতে। এদেরই একটা অংশের অসাধু কর্মী গোপনে ছবি তুলে বিভিন্ন নেটওয়ার্কে ছড়িয়ে দিচ্ছে, এর বিনিময়ে তারা টাকাও পাচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে বেরোতে হলে, সাধারণ মানুষকে বুঝতে হবে। ফেসবুক গ্রুপে যে যা খুশি লিখতে পারে। কিন্তু যে নিচ্ছে তাকে বুঝতে হবে, যারা জ্ঞান দিচ্ছে তাদের ক্রেডিবিলিটি কি আছে? আর সব থেকে বড় বিষয় হল, কেউ অপরাধের শিকার হলে, সঙ্গে সঙ্গে আইনের দ্বারস্থ হন। নয়তো অপরাধীদের মাথা বাড়তেই থাকবে।