স্বাতী চ্যাটার্জি– মহাকাব্য, কল্পকাহিনি, গল্পকথা এসবকে ছাপিয়ে বহু গবেষণায় চিহ্নিত হয়েছে, অধুনা উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যাই ছিল বিষ্ণুর অবতার রামের জন্মভূমি। আর এই গবেষণায় ব্যবহৃত হয়েছিল নানা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি।
দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালামের নেতৃত্বে সেই টিম সিদ্ধান্তে এসেছিল, রামায়ণ শুধু মহাকাব্যই নয়, এর এক ঐতিহাসিক ভিত্তি রয়েছে। প্রযুক্তির হিসেব নিকেশ প্রমাণ করে দিয়েছে রামের জন্ম ঠিক কত বছর ও কতদিন আগে হয়েছিল। আর সে কথা নিজের মুখে বলেছিলেন দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি।

কিংবদন্তী এমনও আছে, রামের পুত্র লব, নিজে একটি নগরীর প্রতিষ্ঠা করেন। তার নাম হয় লবপুরী। প্রাচীন সাহিত্যসুত্র বলছে, সেই লবপুরী আধুনা পাকিস্তানের লাহোর। আর লাহোর নামটিও এসেছে লব থেকে। লব-লও- লাহ-লাহোর। এবং কুশের নগরী ছিল, কৌশুর, যা পরবর্তীকালে কসুর নামকরণ হয়, পাঞ্জাবের সিন্ধ প্রদেশে এখনও একটি জেলা আছে এই নামে।
পাকিস্তানের লাহোরে একটি কেল্লা রয়েছে, যা লাহোর ফোর্ট নামে খ্যাত। সেই কেল্লার মধ্যেই রয়েছে একটি মন্দির, যা আজ পরিত্যক্ত। আর সেই মন্দির হচ্ছে লবের নামে উৎসর্গীকৃত।
আরও পড়ুন- এ অরণ্যে প্রবেশ করলে আর কেউ ফিরতে পারে না
এই কেল্লার নির্মাণ করেছিলেন মুঘল সম্রাট আকবর। কেল্লার কিছু সৌন্দর্যায়ন করে শাহাজাহান, ঔরঙ্গজেব, দারা। এক সময় মুঘলদের কাছ থেকে কেল্লা ছিনিয়ে নেয় আফগান শাসক দুরানি। কয়েক মাসের মধ্যে কেল্লা দুরানিদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় মারাঠারা। যদিও আবার দুরানি দখল করে। কিন্তু হাতে রাখতে পারেনি। এবার কেল্লায় দখল জমায় ভাঙ্গি মিসলরা।

বারোটি শিখ রাজ্যের অন্যতম একটি হল ভাঙ্গি মিলস। ১৭৬৭ থেকে ১৭৯৯ পর্যন্ত শিখ সম্প্রদায়ের হাতে থাকে কেল্লা। তার পর থেকে এই কেল্লার দায়িত্ব সামলান রঞ্জিত সিং। সেই সময় কেল্লার অন্দরে আরও কিছু সংযোজন হয়। তৈরি হয়, নাগমন্দির, লব মন্দির।
আরও পড়ুন- ভারতের এই জায়গায় রয়েছে শকুনির মন্দির
১৯৫৯ সালে কেল্লার দেওয়ান-ই আম খনন করে বেশ কিছু স্বর্ণমুদ্রা উদ্ধার করা হয়। যা ১০২৫ খ্রিস্টাব্দের মহম্মদ গজনভির সময়ের।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর, পাকিস্তানের দখলে যায় এই কেল্লা। সেই সময়ও কেল্লার মধ্যে নাগমন্দিরে ও লব মন্দিরে পুজো হত। কিন্তু জুলফিকার আলি ভুট্টোর সময়কালে পুজো বন্ধ করে দেওয়া হয়।