Breaking News

ভীমাশঙ্কর জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দিরের পুরো তথ্য জেনে নিন

ভীমাশঙ্কর জ্যোতির্লিঙ্গের ইতিহাস (Bhimashankar Jyotirlinga)

মহারাষ্ট্রের পুনে শহর থেকে ১২৫ কিমি দূরে রয়েছে সহ্যদ্রী পাহাড়ের মধ্যে রয়েছে ভীমাশঙ্কর জ্যোতির্লিঙ্গের মন্দির। এখান থেকে উৎপত্তি হয়েছে ভীমা নদী এবং সেটি গিয়ে মিশেছে কৃষ্ণা নদীতে। জনশ্রুতি রয়েছে, এই মন্দির প্রথম নির্মাণ করেন বিশ্বকর্মা। পরে ১৩ শতাব্দীতে গুর্জর প্রতিহারের রাজারা এই মন্দির তৈরি করান। পরবর্তী সময়ে মারাঠা রাজা ছত্রপতি শিবাজী, নানা ফড়নবিশের মতো রাজাদের পৃষ্টপোষকতায় এই মন্দির সেজে ওঠে। এই মন্দিরের বৈশিষ্ঠ হল, এখানে যে শিবলিঙ্গ রয়েছে তা সম্পূর্ণ স্বয়ম্ভু। অর্থাৎ এখানে শিবলিঙ্গটিকে স্থাপন করা হয়নি। পাহাড়ের জন্মকাল থেকেই ছিল।

ভীমাশঙ্কর মন্দির ঘিরে কিংবদন্তী

ত্রিপুরাসুর নামে এক দস্যু ভীমাশঙ্কর জঙ্গলে অমরত্বের জন্য মহাদেবের তপস্যা শুরু করেন। মহাদেব প্রকট হওয়ার পর, তিনি আবেদন করেন, ব্রম্ভাণ্ডের কোনও নর বা নারী, পশু পাখি, এমনকী দেব দেবী তাঁকে যেন মারতে না পারেন। মহাদেব তাঁর তপস্যায় খুশি হয়ে বর দেন কিন্তু একটি শর্ত রাখেন। মহাদেব বলেন, স্থানীয় মানুষদের ঠিকঠাক খেয়াল রাখতে হবে, যাতে তাঁরা কোনও সমস্যায় না পড়েন। ত্রিপুরাসুর মহাদেবের কাছে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে তিনি প্রতিশ্রুতির কথা ভুলে যান। এবং মানব জাতি ও দেবতাদের উপর তিনি হামলা চালাতে থাকেন।

ত্রিপুরাসুরের লাগাতার হামলায় অতিষ্ট হয়ে দেবতারা মহাদেবের শরণাপন্ন হন। তাঁরা জানান, মহাদেব এঁকে আপনি বর দিয়েছেন একমাত্র আপনি বধ করতে পারবেন। ত্রিপুরাসুরকে বধ করার ক্ষমতা আমাদের কারও নেই। এর পরেই মহাদেব এবং পার্বতীর অর্ধনারীশ্বর নাটেশ্বর রূপ ধারণ করে ত্রিপুরাসুরকে বধ করেন।

এই জায়গাকে কেন্দ্র করে আরও একটি কিংবদন্তী হল। সহ্যাদ্রী পর্বতের একটি অংশ ডাকিনি জঙ্গলে বাস করতেন ভীমা নামক এক অসুর। তিনি থাকতেন তার মা কার্কতীর সঙ্গে। ভীমা ছিলেন লঙ্কার রাজা রাবণের ভাই কুম্ভকর্ণের সন্তান। তিনি কিশোর বয়সে যখন জানতে পারেন, যে বিষ্ণুর এক অবতার রাম তাঁর পিতাকে হত্যা করেছে, তখন তিনি প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন। প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ব্রহ্মার তপস্যা শুরু করেন।

ব্রহ্মার কাছে বর পাওয়ার পর, প্রায় তাণ্ডব শুরু করেন ভীমা। তিনি একজন শিবভক্ত কামরূপেশ্বরকে অপহরণ করে বন্দি বানান। ভীমা নির্দেশ দেন, তাঁর হয়ে মহাদেবের কাছে বর চাইতে। কামরূপেশ্বর সেই নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করলে, তলোয়ার দিয়ে শিবলিঙ্গের প্রতি আঘাত করে। সেই সময় মহাদেব প্রকট হয়ে ভীমাকে ভস্মিভূত করেন। সেখানেই মহাদেব জ্যোতির্লিঙ্গের স্থাপনাও করেন।

মন্দির খোলা থেকে

ভোর সাড়ে ৪টে থেকে কাকদা আরতি
সকাল ৫টায় নিজরূপ দর্শন
দুপুর ১২টায় নৈবেদ্য পুজো
দুপুর সাড়ে ১২টায় অভিষেক শুরু, নিত্যপুজো
বিকেল ৩টে মধ্য আরতি (৪৫ মিনিটের জন্য দর্শন বন্ধ)
বিকেল ৪টে থেকে রাত সাড়ে ৯টা শৃঙ্গার দর্শন
সন্ধে সাড়ে ৭টায় আরতি
রাত সাড়ে ৯টায় মন্দির বন্ধ।

আরও পড়ুন

মহাকালেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের ইতিহাস

ওমকারেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের ইতিহাস

ত্রিম্বকেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের ইতিহাস

ভীমাশঙ্কর জ্যোতির্লিঙ্গের ইতিহাস

ঘৃষ্ণেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের ইতিহাস

আমাদের চ্যানেলে যুক্ত হয়ে যান

About Orbit News

Check Also

অযোধ্যার রাম মন্দির: ইতিহাস, কিংবদন্তি ও এক মহামন্দিরের পুনর্জন্ম

অযোধ্যা, যা হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলোর অন্যতম পবিত্র স্থান, ভগবান শ্রীরামের জন্মভূমি হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। এখানে নির্মিত শ্রীরাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!