Breaking News

ভোটবাগান মঠ, ক্ষয়িষ্ণু বাংলার প্রচীন ইতিহাস ও স্থাপত্য

ভোটবাগান মঠের ইতিহাস

হাওড়ার ঘুসুরি অঞ্চলে অবস্থিত ভোটবাগান মঠ ভারতের সমভূমিতে প্রথম তিব্বতি বৌদ্ধ মঠ হিসেবে পরিচিত। “ভোট” শব্দটি তিব্বতি শব্দ “বোড” থেকে উদ্ভূত, যা তিব্বতকে নির্দেশ করে, এবং “বাগান” অর্থ উদ্যান বা বাগান। এই মঠের নাম থেকেই এলাকাটি “ভোটবাগান” নামে পরিচিতি পায়।

মঠের প্রতিষ্ঠা ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

১৮শ শতাব্দীর শেষার্ধে, কোচবিহার ও ভুটানের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে, ব্রিটিশ গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংস এবং তিব্বতের পাঞ্চেন লামার মধ্যে শান্তি স্থাপনের প্রচেষ্টা শুরু হয়। এই উদ্দেশ্যে, পাঞ্চেন লামা পুরাণ গিরি গোঁসাই নামে এক হিন্দু সন্ন্যাসীকে কলকাতায় ওয়ারেন হেস্টিংসের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রেরণ করেন। এই আলোচনার ফলস্বরূপ, ঘুসুরি অঞ্চলে প্রায় ১৫০ বিঘা জমি মঠ ও মন্দির স্থাপনের জন্য বরাদ্দ করা হয়, যা পরবর্তীতে ভোটবাগান মঠ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

মঠের বর্তমান অবস্থা

বর্তমানে, ভোটবাগান মঠের স্থাপত্য ও কাঠামো যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে ভগ্নদশায় পরিণত হয়েছে। ১৭৯৫ সালে এক দল সশস্ত্র ডাকাত মঠে আক্রমণ করে, যার ফলে মঠের মূল মহাকাল মূর্তি চুরি হয়ে যায় এবং পুরাণ গিরি গোঁসাই নিহত হন। এই ঘটনার পর থেকে মঠের কার্যক্রম ধীরে ধীরে হ্রাস পায় এবং তিব্বতীয়দের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

পরিদর্শন ও সংরক্ষণ

ভোটবাগান মঠের ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনায় রেখে, স্থানীয় প্রশাসন ও ইতিহাসপ্রেমীদের উচিত মঠের যথাযথ সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। মঠটি হাওড়া জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন আকর্ষণ হতে পারে, যদি সঠিকভাবে এর রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।

যোগাযোগের উপায়

ভোটবাগান মঠে পৌঁছানোর জন্য হাওড়া স্টেশন থেকে সড়ক পথে ঘুসুরি এলাকায় গিয়ে মঠে পৌঁছানো যায়। স্থানীয় যানবাহন ব্যবহার করে মঠের নিকটবর্তী স্থানে পৌঁছানো সম্ভব।

আমাদের চ্যানেলে যুক্ত হয়ে যান

About Orbit News

Check Also

টাওয়ার অফ সাইলেন্স, পারসিদের অন্ত্যেষ্টি যে ভাবে হয়ে থাকে, ‘মৃত্যুর মৌন শিখর’

স্বাতী চ্যাটার্জি– টাওয়ার অফ সাইলেন্স-অন্তর্জলি যাত্রায় নিস্তব্ধতার অন্তিম চুম্বন।একটি চক্রাকার কূপ। পাশে প্রায় আট ফুটের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!