স্বাতী চ্যাটার্জি- আজ একটা অতি পুরনো গল্প বলবো। গল্পটা হয়তো অনেকেরই জানা। যাদের অজানা তাদের জন্য বলছি।

এক ব্যক্তি একদিন একটি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। রাস্তার পাশেই একটি বড় ছোট কুঁড়ে ঘর আর তার পাশেই বাঁধা একটি হাতিকে দেখতে পান। ভদ্রলোক, কিছুটা এগিয়ে গিয়েও আবার ফিরে এলেন রাস্তা থেকেই ভালো করে হাতিটিকে লক্ষ্য করলেন। বেশ কিছুটা অবাকও হলেন। অবাক হওয়ার কারণ, হাতিটিকে কোনও শক্তপক্ত চেন দিয়ে বাঁধা নয়। তাঁকে আটকানো রয়েছে, একটি ছোট দড়ি দিয়ে সামান্য একটা খুঁটিতে।
ভদ্রলোক, প্রাচিরের কাছে গিয়ে হাতিটিকে ভালো করে লক্ষ্য করতে লাগলেন, আর ভাবতে থাকলেন, এই হাতি যদি পোষ্যই হবে, তাহলে এ ভাবে বেঁধে রাখার মানে কি? আর একটি পূর্ণ বয়স্ক হাতি এমন একটা পাতলা দড়ি দিয়ে সামান্য খুঁটিতে বাঁদাই কেন? হাতিটিতো যে কোনও মুহূর্তে এটিকে ছিঁড়ে বেরিয়ে যেতেই পারে!
এমন কথা ভাবছেন, আচমকাই কুঁড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন এক ব্যক্তি, তাঁকে দেখেই ভদ্রলোক জিজ্ঞাসা করলেন, এটি কি আপনার হাতি?
ওই ব্যক্তি বললেন, হ্যাঁ কেন বলুনতো?

ভদ্রলোক প্রশ্ন করলেন, না ভাবছি একটি পূর্ণ বয়স্ক হাতিকে এভাবে বেঁধে রাখার কারণ কি? এতো যে কোনও মুহূর্তে ছিঁড়ে বেরিয়ে যেতে পারে?
ওই ব্যক্তি কিছুটা হেসে উত্তর দিলেন, আসলে হাতিটিকে যখন আনা হয়, তখন সে খুব ছোট ছিল, সেই সময় থেকেই ওকে এমনই দড়ি দিয়ে এই খুঁটিতে বাঁধা হত। ধীরে ধীরে বড় হতে লাগল, তখনও এই খুঁটিতেই একই সাইজের দড়ি দিয়ে বাঁধা হত, সেই সঙ্গে ও বিশ্বাস করতে শুরু করেছিল, এই দড়ি তার পক্ষে ছেঁড়ে সম্ভব নয়। হাতিটি এখনও বিশ্বাস করে, সে এই দড়ি ছিঁড়ে বেরোতে পারবে না।

নীতিকথা- আপনার শিশুকে ছোট থেকে অনেক কিছু করতে বারণ করা হয়, কিন্তু সময়ের সঙ্গে নিজেকে বদলান, নয়তো ছোটবেলার নেতিবাচক প্রভাবগুলি সমাজের সবার কাছে ক্ষতিকারক হয়ে উঠবে। বিশ্বাস করতে শিখবে, সেই ঠিক, বাকি দুনিয়া ভুল।