অর্বিট ডেস্ক– স্কুলে পড়ার সময় ৯০ শতাংশ মধ্য ও নিম্নমেধার পড়ুয়াদের শুনতে হয়েছে, ‘তোদের মাথায় কি গোবর ভরা আছে’? শিক্ষক শিক্ষিকাদের কাছে এমন কথা শুনতে হয়নি খুব কম লোক রয়েছে। কিন্তু এই গোবর দেশের একটা বড় অর্থনীতির দিশা হতে চলেছে।
অতি সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান একটি কনভেনশনে গিয়ে দাবি করেছেন, গোবর ও গোমূত্র দেশের অর্থনীতি একটা স্তম্ভ হয়ে উঠতে পারে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরেই, বিরোধীরা যেমন ঠাট্টা শুরু করেছে, তেমনই বিতর্ক শুরু হয়েছে।
এবঙ্গে গোবর সংক্রান্ত চর্চা না থাকলেও ভারতের ভিন রাজ্যে রয়েছে। তাহলে জানা যাক- গোবর থেকে সত্যি কি আয় করা সম্ভব? আর তা হলে সেটা কত হতে পারে?
অনিতা এম। কর্ণাটকের এক প্রত্যন্ত গ্রামের উপজাতি মহিলা। তিনি এখন কৃষিক্ষেত্রে নয়া উদাহরণ তৈরি করেছেন। দিশা দেখাচ্ছেন আরও বহু নারীকে। কর্ণাটকের বেত্তামপাড়ি গ্রামের অনিতা, সাড়ে চার একরের মতো জমি ছিল। সেখানেই তিনি কৃষিকাজ করতেন। কিন্তু বছরের পর বছর সে ভাবে আয় তেমন কিছুই হত না।
স্থানীয় কৃষি আধিকারিক ও এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হাত ধরে, তাঁর নিজের জমিতে শুরু করে ইন্টিগ্রটেড এগ্রিকালচার। একই জমিতে যেমন চাষাবাদ চলছে, তেমনই, প্রাণীসম্পদের কাজ। চাষের বর্জ্য, চলে যায় গো খাদ্যের জন্য। আবার গরুর গোবর থেকে যেমন বায়োগ্যাস, ঘুঁটে তৈরি করে বাজারে ছাড়া হচ্ছে, তেমন দুধ, মাখন, ঘিও বাজারে ছাড়া হচ্ছে।
বর্তমানে অনিতার আয়, লাইভস্টক থেকে বছরে ৩ লক্ষ টাকা। সব্জি থেকে আড়াই লক্ষ টাকা, ধান থেকে ৪৫ হাজার টাকা। ভারমিকম্পোজ থেকে ১ লক্ষ টাকা। ঘুঁটে থেকে ৫০ হাজার টাকা। গড়ে মাসিক আয় প্রায় সাত লক্ষ টাকা। অনিতা এই সাফল্য শুধু নিজের ঝুলিতেই নেননি। তিনি কর্ণাটকে প্রায় ৪০০ চাষীকে পরামর্শ দান করেছেন। তাঁর থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৫ জন চাষী গোট ফার্মিং শুরু করেছেন।

আরও পড়ুন- ব্যবসায় এগোবেন কী করে? জানুন প্রতিটি ধাপ
অনিতার কর্মকাণ্ড খ্যতি ছড়িয়েছে সারা রাজ্যে। একাধিক পুরস্কারও নিজের ঝুলিতে ছিনিয়ে নিয়েছেন। জেলার সেরা মহিলা চাষীর পুরস্কার, সংক্রান্তি পুরস্কার ২০১১। ম্যাঙ্গালোর হর্টিকালচার পুরস্কার ২০১৪-১৫ । ২০১১ সালে ন্যাশনাল এগ্রিকালচার ফেস্টের সেরা পুরস্কার।