অর্বিটনিউজ ডেস্ক- পুজো কেটে গেল, সামনেই আসছে উইকেন্ডের ভরা মরসুম, সেই সঙ্গে লম্বা ছুটিতেও বেড়াতে যাওয়ার আদর্শ সময়। কেউ একা বেড়াতে যাবেন, কেউ কোনও গ্রুপে, কেউবা সম্পূর্ণ নিজস্ব পরিবার নিয়ে। আর সেই সমস্ত সফরসূচিতে বয়স্ক ও বাচ্ছারা থাকলে একটু চিন্তা থাকে বৈকি! তবে সবথেকে বেশি সমস্যা দেখা দেয় শিশুদের ক্ষেত্রে অন্তত তিন চার বছর বয়স পর্যন্ত যাঁদের বয়স তাঁরা সমস্যা পড়ে। অন্যদিকে, বয়স্ক মানুষ যঁদের সুগার, হার্টের সমস্যা ও বাতের সমস্যা রয়েছে তাঁরাও নানা ঝামেলায় পড়েন।
আরও পড়ুন- উইকেন্ডে বেড়িয়ে আসুন বাংলার প্রাচীন রাজধানী
তবে বেড়াতে যাওয়ার আগে ছোটখাটো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা সেরে নিতে পারলেই, যে কোনও ধরণের বড় সমস্যার হাত থেকে ঝামেলা মেটানো যায়। আজকের স্বাস্থ্য পর্বে থাকছে এমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু টিপস। তবে পর্ব শুরু করার আগে একটা বিষয় স্পষ্ট করে বলে দেওয়া উচিত। এই পর্বটি সম্পূর্ণ জরুরি ভিত্তিক পরিস্থিতির জন্য। যাদের ক্রনিক কোনও সমস্যা রয়েছে, তাঁরা বেড়াতে যাওয়ার আগে নিজেদের চিকিত্সকদের সঙ্গে ডিটেলে আলোচনা করে নেবেন। এখানে যে কোনও মডার্ন মেডিসিনের বা অ্যালোপ্যাথি ওষুধের নাম বলা হবে না। থাকবে শুধু হোমিওপ্যাথি ও ঘরোয়া টোটকা। বেড়াতে যাওয়ার আগে যে প্রধান ১০টি ওষুধ সঙ্গে রাখতে পারেন(সবার জন্য প্রযোজ্য)
১। আর্নিকা- (মাদার টিংচার) আচমকা কোনও জায়গায় মোচ লেগে লেগে ব্যাথার উপশমে সেই জায়গায় লাগাতে পারেন। পাশাপাশি খেতে হবে আর্নিকা ৩০ পোটেন্সির (৩০ নম্বর গ্লোবিউল হলে ৫-৬টি দানা) দিনে চারবার।
২। কোকা- পাহাড়ের ওঠার সময় বা অ্যাকিউট মোশন সিকনেশ রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে মহৌষধ হিসেবে কাজ করে কোকা। এর ৬ অথবা ৩০ পোটেন্টি ব্যাবহার করতে পারেন। যাঁদের উচ্চস্থানে গেলে শ্বাসকষ্টের প্রবণতা রয়েছে, তাঁরা দু-তিন দিন আগে থেকে এই ওষুধ দিনে ৩ বার খেতে পাারেন (৩০ নম্বর গ্লোবিউল হলে ৫-৬টি দানা)
আরও পড়ুন- ছোট ছুটির খোঁজে দেখুন অফবিট ওডিশা
আরও পড়ুন- চলুন মেঘ সূর্যের দেশ অরুণাচল
৩। নাক্স ভমিকা- যাঁদের গুরুপাক খাবার খেয়ে হজমের সমস্যা হয়, তাদের ক্ষেত্রে নাক্সভমিকা অব্যর্থ। অতিরিক্ত, তেল, ঝাল, মশলা খাবারের পর মাথা ভার, ব্যাথা শরীরে অস্বস্তি রয়েছে তাঁরা নাক্স ভমিকা খেতে পারেন। এই ওষুধ খাওয়ার পর অনেকের বমি হয়ে থাকতে পারে। (সেটি কোনও খারাপ লক্ষন নয়) নাক্স ভমিকা ৩০ পোটেন্টির দিনে তিন বার দুদিনের জন্য।
৪। ফেরাম ফস (বায়োকেমিক)- অনেকের কোনও জায়গায় গিয়ে আচমকা ঠান্ডা লেগে জ্বর আসে। তেমন কোনও জ্বর এলে এই ওষুধ জ্বর কমাতে ভালো কাজ করে। তবে 6x পোটেন্সি ব্যবহার করা উচিত। চারটি করে ট্যাবলেট দিনের চারবার সঙ্গে অবশ্যই হাল্কা গরম জল। তবে ধুম জ্বর এলে আধ ঘণ্টা অন্তর চারটি করে ট্যাবলেট দেওয়া যেতে পারে পর পর চারবার।
৫। লিডাম- মৌমাছি বা বোলতা কামড়ে দিয়েছে? এক ঘণ্টা অন্তর তিনবার খাওয়ানো যেতে পারে। ব্যাথা থেকে উপশম পাওয়ার দারুণ ওষুধ। পোটেন্সি ৩০ (৩০ নম্বর গ্লোবিউলের ৫টি করে দানা) অনেকের থাইয়ের কাছে মাসল টান ধরে, হাঁটতে পারেন না, খুব যন্ত্রণা করে, তাদের ক্ষেত্রেও লিডাম ম্যাজিকের মতো কাজ করে।
৬। রিউম-৩০ বেড়াতে গেছেন, শিশুরা কোনও কারণ ছাড়াই হয়তো কাঁদছে, মাঝে মধ্যে পেটের ব্যাথার জন্য কন্টিনিউয়াস কেঁদে চলে সেক্ষেত্রে শিশুদের জন্য খুব উপকারী ( শিশুদের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ চিকিতসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ প্রয়োগ করবেন, এটি অত্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে একবার প্রয়োগ করা যেতে পারে। বাকি পরামর্শ নিয়ে প্রয়োগ করবেন।)
৭। ম্যাগ ফস 6x- গায়ে ম্যাচম্যাচে ব্যাথা বা মাসলে ব্যাথা, গায়ে হাত পায়ে যন্ত্রণা এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে, ম্যাগ ফস 6x ব্যাবহার করতে পারেন। খুব বেশি ব্যাথা থাকলে এক আধ ঘণ্টা অন্তর পর পর চার বার গাল্কা গরম জলের সঙ্গে চারটি করে ট্যাবলেট।
৮। ইপিকাক ৩০- যাঁদের বমির টেন্ডেন্সি রয়েছে, তাদের পক্ষে এটি বেশ ভালো ওষুধ। বমি বন্ধ করতে ইপিকাক ৩০ (৩০ নম্বর গ্লোবিউলের ৪টি করে দানা ২ ঘণ্টা অন্তর দেওয়া যেতে পারে।
ভ্রমণ, স্বাস্থ্য, বাণিজ্য, সাহিত্য এ ছাড়া নানা ধরণের খবরাখবরে আপডেট থাকতে আমাদের পেজ ফলো করুন।
৯। রোবিনিয়া (মাদার টিংচার)- যাঁদের কিছু খেলেই অম্বল হচ্ছে এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে, রোবিনিয়া মাদার টিংচার হাফ কাপ জলে ১০ ফোঁটা দিয়ে খেতে পারেন। সারা দিনে ৩ বার। অম্বল, চোঁয়া ঢেকুর বন্ধের জন্য মহৌষধ।
১০। আর্সেনিক আয়োড ৬- এই ওষুধটি একটি বিশেষ সময়ে ব্যবহার করলে খুব ভালো ফল পাওয়া যায়। যাদের ঠান্ডা লেগেছে, ধারাবাহিক হাঁচি হচ্ছে ও নাক দিয়ে কাঁচা জল গড়াচ্ছে। এমন অবস্থা এলেই এই ওষুধ এক ঘণ্টা অন্তর চারবার খাওয়া যেতে পারে। হাঁচি ও নাক দিয়ে জল পড়া বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু এই অবস্থার পর, যাদের বুকে সর্দি বসে যায়, তাদের ক্ষেত্রে এই ওষুধ আর কাজ করবে না।
সতর্কীকরণ
বিঃদ্রঃ- হোমিওপ্যাথি চিকিত্সা মডার্ন মেডিসিনের মতো একদমই নয়। অর্থাত একটি রোগের জন্য এক একটি ওষুধ নয়। ধ্রুপদী হোমিওপ্যাথি চিকিতসায় কন্সটিটিউশনাল চিকিতসার প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলেইচিকিত্সা করাতে হবে। এখানে যে ওষুধগুলির কথা বলা হয়েছে, এগুলি কেবলমাত্র জরুরি ভিত্তিতে থেরাপিউটিক ব্যবস্থা। যেমন পায়ে আঘাত লাগলে ক্রেপ ব্যান্ডেজ বাঁধা। কিন্তু পা ভেঙেছে কিনা, তা টেস্ট করে পরবর্তী চিকিত্সা করাতে হয়। তেমন অবশ্যই পরামর্শ নেবেন। ওষুধ সংক্রান্ত কোনও সমস্যার ইতিহাস বা কোনও রকম অ্যালার্জি, ক্রনিক রোগ থাকলে জরুরি ভিত্তিতেও চিকিতসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ প্রয়োগ করবেন না।