অর্বিট ডেস্ক– বিশ্বের সবচেয়ে বড় গুহা। একা প্রবেশ করলে হারিয়ে যাওয়া নিশ্চিত। হ্যাঁ বিশ্বের সবচেয়ে বড় গুহাটি রয়েছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াতেই। ভিয়েতনাম ও লাওসের সীমানা এলাকায় মিলেছে কয়েক লক্ষ বছরের পুরনো লাইমস্টোনের প্রাকৃতিক গুহা। নাম হাং সং ডোং। যার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায় পার্বত্য নদীর গুহার।
১৯৯১ সালে এই গুহাটি প্রথম আবিষ্কার করেন স্থানীয় এক বাসিন্দা হো হান। এগারকাঠ নামে একটি দুর্মুল্য গাছ সংগ্রহ করে যান গভীর পাহাড়ি জঙ্গলে। এই গাছ মূলত সুগন্ধি তৈরিতে কাজে লাগে। সেখানেই নজরে আসে প্রকাণ্ড এক গুহাপথ। গভীর জঙ্গলে তিনি প্রথমে একটি অদ্ভুত শব্দ শুনতে পান। যেন প্রবল কোনও গর্জন হচ্ছে। সনসনানি হাওয়ার শব্দ যেন বিচিত্র রূপ নিচ্ছে। সেই শব্দের সূত্র ধরেই পৌঁছে যান গুহার মুখে। তারপরেই বিষয়টি জানাজানি হতে, প্রশাসনিত স্তরে খবর ছড়ায়।
২০০৯ সালে এই গুহা আন্তর্জাতিক স্তরে দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সেই বছরই হাওয়ার্ড লিম্বার্টের নেতৃত্বে শুরু হয়, গুহা ম্যাপিঙের কাজ। গবেষকদল থেকে কেভ এক্সপ্লোরারেরা আসতে শুরু করেন। ২০১৩ সালে জনগনের জন্য খুলে দেওয়া হয় এই গুহা। গবেষকেরা গুহার একটি বড় অংশ এক্সপ্লোর করে জানায়, গুহার উচ্চতা ২০০ মিটার, কিছু জায়গায় ৫০০ মিটারেরও বেশি। চওড়া ১৭৫ মিটার। এবং লম্বা সাড়ে নয় কিলোমিটার।
এই গুহা ইতিমধ্যেই পর্যটনের জন্য খুলে দিয়েছে ভিয়েতনাম সরকার। কিন্তু এর মূল্য যথেষ্ট। সরকার নিয়ন্ত্রিত স্থানীয় কিছু সংস্থা এই কেভ ট্যুর করিয়ে থাকেন। ক্যাম্পিঙে, থাকা, খাওয়া এবং গাইড মিলিয়ে খরচ পড়ে জনপ্রতি ৩ হাজার মার্কিন ডলার।
আরও ইন্টেরেস্টিং বিষয় হল, প্রকাণ্ড জঙ্গলের মধ্যে এই দৈত্যাকার গুহার মধ্যেও রয়েছে রেনফরেস্ট। এই গুহায় পৌঁছনোর উপায় হল। প্রথমেই যেতে হবে, পং নাকে বাং ন্যাশনাল পার্কের কাছে একটি উপজাতিদের গ্রামে। এখান থেকে। পায়ে হেঁটে চলা শুরু। দু দিন ধরে গভীর জঙ্গল ও নদীপথ পেরিয়ে পৌঁছনো বিখ্যাত গুহায়।

একটি ট্রিপে সর্বোচ্চ ১০ জন যাত্রী যেতে পারেন। তাঁদের সঙ্গে থাকেন, ২জন গুহা বিশেষজ্ঞ, ৩জন স্থানীয় গাইড, ২জন কুক, ২জন পার্ক রেঞ্জার, ২০ জন পোর্টার। গুহা অভিযানের পর্যটন শুরু হয় প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি থেকে, চলে অগাস্ট পর্যন্ত। সপ্তাহে একদিনই এই ট্যুর ছাড়া হয়।