অর্বিট ডেস্ক– দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বহু মানুষই ভাত খান। ইউরোপ এবং আমেরিকাতেও খাদ্য তালিকায় ভাত বা চালের ব্যবহার রয়েছে। কিন্তু বিশ্বে প্রথম কোথায় এবং কোন সময়ে ধান উত্পাদন শুরু হল? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে মিলল চমকে দেওয়ার মতো তথ্য।
আমরা সবাই জানি, বর্তমানে সারা বিশ্বে যে পরিমাণ ধান উত্পাদন হয়, তার সিংহ ভাগই জায়গা দখল করে রয়েছে চিন। প্রায় ৩৫ শতাংশ ধান উত্পাদন হয়। আধুনিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ধানও উত্পাদন বহুকাল আগে থেকেই হত চিনে।

প্রায় ১০ হাজার বছরের পুরনো একটি চালের ক্ষুদ্র টুকরো উদ্ধার হয়েছে। জায়গাটি হল চিনের ইয়াংজি নদীর তীরবর্তী এলাকা সাংসানে। ২০১৭ সালে একদল গবেষক ইয়াংজি নদী তীরবর্তী এলাকায় খননকার্য শুরু করে। মূল উদ্দেশ্য ছিল, প্রাচীন পুরাতাত্ত্বিক কিছু সন্ধান করা।
কিন্তু খননকার্যের সময়ই তাদের হাতে উঠে আসে, হাজার বছরেরও পুরনো একটি চালের দানা। গবেষকেরা বেশ কয়েক মাস ধরে অনুসন্ধান চালায়, কার্বনডেটিংসহ একাধিক পরীক্ষার পর সিদ্ধান্তে আসে।
ওই ক্ষুদ্র দানাটি প্রায় ৯৪০০ বছরের পুরনো। গবেষকদের অনুমান, প্রায় ১০ হাজার বছর আগে এখানকার মানুষেরা, ধান চাষ শুরু করতে শিখেছিল এবং রান্না করে খেত।
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ধানের চাষ হত তার বহু নিদর্শন রয়েছে। কিন্তু এতো পুরনো চালের নিদর্শন এখনও কোথাও মেলেনি গেবেষকদের হাতে। ফলে মনে করা হচ্ছে, বিশ্বে যতগুলি প্রাচীন সভ্যতা রয়েছে, তার মধ্যে চিন অন্যতম আর সেখান থেকেই ধান উত্পাদন প্রথম শুরু হয়।

সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হল, ধান চাষের জন্য মূলত সমতল ভূমি প্রয়োজন। কারণ, যাতে জমির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জল সিঞ্চন হয়। কিন্তু দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বহু দেশ যেমন চিন, কম্বেডিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, লাওসে পাহাড়ের গায়েই ধান চাষ করা হয়। প্রায় হাজার বছর আগেই পাহাড়ি এলাকায়, প্রয়োজনমতো জমির চরিত্রে বদল ঘটানো হয়েছে।
ভারতের সমতল ভূমির ধানের গোত্র এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশেগুলির পাহাড়ি ধানের গোত্র একদমই ভিন্ন।