Breaking News

পঞ্চ জ্যোতির্লিঙ্গ সফরের দুর্দান্ত ট্যুর প্ল্যান সঙ্গে থাকছে অজন্তা ইলোরা

ভ্রমণ ডেস্ক- আজ আমরা এক মহাযাত্রার পরিকল্পনা তুলে ধরবো। আমাদের এই যাত্রায় থাকছে পঞ্চ জ্যোতির্লিঙ্গ, শিরডি এবং অজন্তা ইলোরা। এ ছাড়া, আরও এমন কিছু দ্রষ্টব্য জায়গা, যা আপনাকে বিস্মিত করবে।

সবার আগে ট্যুর পরিকল্পনা দেখে নেওয়া যাক, তারপর আসবো বিস্তারিত তথ্য পরিবেশনে।

পঞ্চজ্যোতির্লিঙ্গ ট্যুর প্ল্যান সঙ্গে শিরডি অজন্তা ইলোরা

১ দিন হাওড়া থেকে ট্রেন

২দিন রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ পৌঁছনো উজ্জয়নে, রাতের আহার সেরে রাত্রিবাস হোটেলে।

৩দিনসকালে বেরিয়ে পড়া মহাকালেশ্বর মন্দিরে পুজো দিতে। এদিনই প্রথম জ্যোতির্লিঙ্গ দর্শন। দুপুরে আহার সেরে বেরিয়ে পড়া ওমকারেশ্বরের উদ্দেশে। প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টার পথ। ওমকারেশ্বরে গিয়ে রাত্রিবাস। ১৩৭ কিমি পথ।

৪দিন এদিন সকালে ওমকারেশ্বরে মামলেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ দর্শন, পুজো দেওয়া। বারোটা নাগাদ রওনা দেওয়া ভুসওয়ালের উদ্দেশে। পথে দেখে নেওয়া কিছু দ্রষ্টব্য। রাত্রিবাস ভুসওয়ালে। ১৯০ কিমি পথ

৫ দিনদুপুরের আহার সেরে ১.৩০ নাগাদ ট্রেন ধরে সোজা নাসিক রোড। হোটেলে রাত্রিবাস।

৬ দিনএদিন সকালে রওনা ত্রিম্বকেশ্বর মন্দিরে পুজো দিয়ে ফেরার পথে, অঞ্জনেরি পাহাড়, তপোবন ও পঞ্চবটি দর্শন।

৭ দিনসকালে ব্রেকফাস্ট সেরে রওনা দেওয়া ভীমাশঙ্কর জ্যোতির্লিঙ্গের উদ্দেশে। প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টার রাস্তা। ২০৬ কিমি পথ। হোটেলে গিয়ে রেস্ট।

৮ দিনএদিন সকালে ভীমাশঙ্কর জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দিরে পুজো দেওয়া। এবং হাঁটা পথে দেখে নেওয়া গুপ্ত ভীমা শঙ্কর মন্দির ও ভীমা নদীর উদগমস্থল। দুপুরের আহার সেরে রওনা দেওয়া শিরডির উদ্দেশে। শিরডিতে রাত্রিবাস।

৯ দিন শিরডি থেকে রওনা দেওয়া শনি শিগ্নাপুর। ভারতের দুটি প্রাচীন বিখ্যাত শনি মন্দির রয়েছে। তার মধ্যে একটি মহারাষ্ট্রের শনি শিগ্নাপুরে। এখানে পুজো দিতে পারেন। ফিরে আসা শিরডিতে। বিকেলে দেখে নেওয়া শিরডির অন্যান্য দ্রষ্টব্য স্থানগুলি। রাত্রিবাস শিরডিতে।

১০ দিনএদিন সকালে ব্রেকফাস্ট সেরে রওনা দেওয়া ঔরঙ্গাবাদের উদ্দেশে। পথে দেখে নেওয়া পৈঠান জলাধারসহ দেখে নেওয়া কিছু দ্রষ্টব্য স্থান। ১৩০ কিমি পথ

১১ দিনআজ সকালেই দেখে নেওয়া ঘৃষ্ণেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দির, পুজো দিয়ে সোজা চলে যাওয়া ইলোরা দেখতে। ফিরতি পথে দেখে নেওয়া খুলদাবাদ।

১২ দিন আজ সকালে ব্রেকফাস্ট সেরে রওনা দেওয়া অজন্তার উদ্দেশে। ১০৬ কিমি। দেখে নেওয়া অজন্তা। বিকেলের দিকে রওনা দেওয়া ৭০ কিমি পথ। ভুসওয়ালে রাত্রিবাস।

১৩ দিন ভুসওয়াল থেকে ১২.৪৫ মিনিটে গীতাঞ্জি ধরে হাওড়ার উদ্দেশে রওনা।

১৪ দিন- হাওড়ায় পৌঁছনো।

এই ট্যুরে আপনারা নিজস্ব গ্রুপ করে যেতে পারেন, হোটেল, গাড়ি এবং ভালো খাওয়ার জায়গা সম্পর্কিত সাহায্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন 9073503958 নম্বরে। এ ছাড়া এই ট্যুর আমাদের গ্রুপের তরফে আয়োজন করা হয়ে থাকে। আমাদের গ্রুপ ট্যুরের সম্পূর্ণ আপডেটেড তথ্য পেতে হলে পেজে ফ্ল্যাশ হওয়া হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হতে পারেন।

১। মহাকালেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের ইতিহাস। History of Mahakaleswar Jyotirlinga

ভারতে মোট ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গ রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম মহাকালেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দির। এই মন্দির মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়নে পবিত্র শিপ্রা নদীর তীরে অবস্থিত। মহাকালেশ্বর মন্দির তৈরি হয়েছে, মারাঠা, ভূমিজ এবং চালুক্য স্থাপত্যরীতিতে। মন্দিরের পাঁচটি স্তর রয়েছে, তার মধ্যে একটি আন্ডাগ্রাউন্ডে। উত্তরে পার্বতী, পশ্চিমে গণেশ, পূর্বে কার্তিক এবং মহাদেবের মুখ দক্ষিণমুখী।

বিস্তারিত জানুন মহাকালেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের ইতিহাস

২। মামলেশ্বর বা ওমকারেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের ইতিহাস (Omkareswar Jyotirlinga)

ওমকারেশ্বর মন্দির মধ্যপ্রদেশের পবিত্র নর্মদা নদীর মান্ধাতা বা শিবপুরী দ্বীপে অবস্থিত। এই মন্দিরের পাঁচটি তল রয়েছে। ওমকারেশ্বর নামটি এসেছে ওম থেকে। মনে করা হয়। পৃথিবী সৃষ্টির সময় প্রথম যে শব্দের সৃষ্টি হয়েছিল তা হল ওম। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে যত ধরণের শব্দ রয়েছে, তার জন্ম এবং অন্তিম শব্দের রূপই হল ওম। কিংবদন্তী রয়েছে, এই অঞ্চলে একটা সময়ে বাস করতেন আদিবাসী ভিল সম্প্রদায়ের রাজারা। তাঁরাই প্রথম এই মন্দিরের সূচনা করেন। সেই সময়ে মালওয়া অঞ্চলে রাজত্ব করছেন পারমার রাজারা। ১০-১৩ শতাব্দীতে চৌহান রাজপুতেরা মন্দিরের সংস্কার করেন। পরবর্তী সময়ে ১৮ শতাব্দীতে মারাঠারা মন্দিরের আমূল সংস্কার করেন।

বিস্তারিত জানুন ওমকারেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের ইতিহাস

৩। ত্রিম্বকেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দিরের কথা (Trimbakeswar Jyotirlinga)

পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, ব্রহ্মগিরি পাহাড়ে বাস করতেন ঋষি গৌতম এবং তাঁর স্ত্রী অহল্যা। দুজনে উপাসনা ও চাষাবাদের উপর জীবনযাপন করতেন। এঁদের প্রতি হিংসা করতেন অন্যান্য তপস্বীরা। একবার, ঋষি গৌতমের ক্ষেতে, অন্য তপস্বীরা একটি গরুকে পাঠিয়ে দেয়। যাতে ফসলের ক্ষতি হয়। ক্ষেত থেকে সরানোর জন্য ঋষি গৌতম গরুটিকে তাড়া করেন, কিন্তু গরুটি পালাতে গিয়ে কোনও কারণে মারা যায়। এরপরেই অন্য তপস্বীরা, ঋষি গৌতমের উপর গো হত্যার অভিযোগ আনে। এবং নিদেন দেন, প্রায়শ্চিত্ত করতে গেলে গঙ্গাকে এখানে আনতে হবে।

বিস্তারিত জানুন ত্রিম্বকেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের ইতিহাস

৪। ভীমাশঙ্কর জ্যোতির্লিঙ্গের ইতিহাস (Bhimashankar Jyotirlinga)

মহারাষ্ট্রের পুনে শহর থেকে ১২৫ কিমি দূরে রয়েছে সহ্যদ্রী পাহাড়ের মধ্যে রয়েছে ভীমাশঙ্কর জ্যোতির্লিঙ্গের মন্দির। এখান থেকে উৎপত্তি হয়েছে ভীমা নদী এবং সেটি গিয়ে মিশেছে কৃষ্ণা নদীতে। জনশ্রুতি রয়েছে, এই মন্দির প্রথম নির্মাণ করেন বিশ্বকর্মা। পরে ১৩ শতাব্দীতে গুর্জর প্রতিহারের রাজারা এই মন্দির তৈরি করান। পরবর্তী সময়ে মারাঠা রাজা ছত্রপতি শিবাজী, নানা ফড়নবিশের মতো রাজাদের পৃষ্টপোষকতায় এই মন্দির সেজে ওঠে। এই মন্দিরের বৈশিষ্ঠ হল, এখানে যে শিবলিঙ্গ রয়েছে তা সম্পূর্ণ স্বয়ম্ভু। অর্থাৎ এখানে শিবলিঙ্গটিকে স্থাপন করা হয়নি। পাহাড়ের জন্মকাল থেকেই ছিল।

বিস্তারিত জানুন ভীমাশঙ্কর জ্যোতির্লিঙ্গের ইতিহাস

৫) ঘৃষ্ণেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের ইতিহাস (Grishneshwar Jyotirlinga)

ঘৃষ্ণেশ্বর শব্দটির বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায় সহানুভূতির দেবতা। মহারাষ্ট্রের দৌতলতাবাদে ভেরুলে রয়েছে ঘৃষ্ণশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের মন্দির। এই মন্দিরের কথা উল্লেখ রয়েছে শিবপুরাণ ও পদ্মপুরাণে। ১৩-১৪ শতাব্দীতে এই মন্দিরে হামলা চালিয়ে ধবংস করে দেয় দিল্লির সুলতান। পরবর্তী সময়ে ১৬ শতাব্দীতে মারাঠা রাজা মালোজু ভোঁশলে এই মন্দির নির্মাণ করান। তিনি ছিলেন ছত্রপতি শিবাজীর পিতামহ। বর্তমানে যে মন্দিরটি দেখা যায়, এটি তৈরি করিয়েছিলেন ইন্দোরের রানি অহল্যাবাই হোলকার। তিনি কাশী বিশ্বনাথের মন্দিরটিও নির্মাণ করিয়েছিলেন।

বিস্তারিত জানুন ঘৃষ্ণেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের ইতিহাস

শিরডি ভারতের অন্যতম তীর্থক্ষেত্র (Shirdi)

ভারতের যতগুলি জনপ্রিয় তীর্থক্ষেত্র রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম শিরডি। ধর্মীয়গুরু সাঁইবাবাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এই তীর্থক্ষেত্র। সারা দিন ধরে চলে বিশাল কর্মকাণ্ড। শিরডির সাইবাবা জীবনি নিয়ে নানা ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে দুটি বই থেকে বেশ কিছু তথ্য মেলে। একটি হেমাদপান্থের লেখা শ্রী সাঁই সচ্চরিত্র, অন্যটি হল নরসিংহ স্বামীর লেখা লাইফ অফ সাইবাবা। তবে কেউ সঠিকভাবে সাইবাবা জন্মস্থান সম্পর্কে ঐতিহাসিক তথ্য দিয়ে বলতে পারেননি। মনে করা হয়, ১৮৩৮ থেকে ৪২ সালের মধ্যে শিরডি থেকে কিছুটা দূরে কোনও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। জায়গার নাম মারাঠওয়াড় পাথরি। অনেকে মনে করেন ১৮৩৫ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর তিনি জন্মগ্রহন করেন।

বিস্তারিত জানুন শিরডি সাঁইবাবা সম্পর্কিত তথ্য

অজন্তা ইলোরা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য

আমাদের চ্যানেলে যুক্ত হয়ে যান

About Orbit News

Check Also

অযোধ্যার রাম মন্দির: ইতিহাস, কিংবদন্তি ও এক মহামন্দিরের পুনর্জন্ম

অযোধ্যা, যা হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলোর অন্যতম পবিত্র স্থান, ভগবান শ্রীরামের জন্মভূমি হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। এখানে নির্মিত শ্রীরাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!