শিরডি ভারতের অন্যতম তীর্থক্ষেত্র
ভারতের যতগুলি জনপ্রিয় তীর্থক্ষেত্র রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম শিরডি। ধর্মীয়গুরু সাঁইবাবাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এই তীর্থক্ষেত্র। সারা দিন ধরে চলে বিশাল কর্মকাণ্ড। শিরডির সাইবাবা জীবনি নিয়ে নানা ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে দুটি বই থেকে বেশ কিছু তথ্য মেলে। একটি হেমাদপান্থের লেখা শ্রী সাঁই সচ্চরিত্র, অন্যটি হল নরসিংহ স্বামীর লেখা লাইফ অফ সাইবাবা। তবে কেউ সঠিকভাবে সাইবাবা জন্মস্থান সম্পর্কে ঐতিহাসিক তথ্য দিয়ে বলতে পারেননি। মনে করা হয়, ১৮৩৮ থেকে ৪২ সালের মধ্যে শিরডি থেকে কিছুটা দূরে কোনও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। জায়গার নাম মারাঠওয়াড় পাথরি। অনেকে মনে করেন ১৮৩৫ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর তিনি জন্মগ্রহন করেন।
সাঁইবাবা সম্পর্কিত কিছু সূত্রের মতামত
কিছু সূত্রে দাবি করা হয়, সাইবাবা ১৬ বছর বয়সে মহারাষ্ট্রের আহমেদনগরের শিরডি গ্রামে আসেন। এখানে তিন বছর থাকার পর তিনি আচমকা উধাও হয়ে যান। পরে ১৮৫৮ সালে তিনি আবার ফিরে আসেন। সেখানকার এক নিম গাছের তলায় এসে ধ্যান করতেন এবং বসে থাকতেন। ধীরে ধীরে গ্রামের মানুষেরা কৌতুহল বশত তাঁর কাছে আসতে থাকেন এবং আধ্ত্ম্যকথায় মগ্ন হতে থাকেন। জানা যায়, তাঁর আধাত্ম জ্ঞান শুনে, গ্রামের এক পুরোহিত মহসাপতি তাঁকে সাঁই বলে ডাকতে থাকেন। সাঁই শব্দটি আসলে পারসি ভাষা অর্থাৎ পবিত্র পুরুষ।
সাঁইবাবাকে কেন্দ্র করে বহু অলৌকিক ঘটনার কথা চালু রয়েছে। কথিত আছে, তিনি ভক্তদের জন্য একটি হাঁড়ির মধ্যে নিজের হাত দিয়ে ফুটন্ত গরম জলে রান্না করতেন। এবং সেই খাবার ভক্তদের মধ্যে পরিবেশন করা হত। সারা দিনে যত অভুক্ত মানুষ আসত, তাঁরা প্রত্যেকেই খাবার পেতেন।
১৯১০ সালে একবার শিরডিসহ আশে পাশের এলাকায় কলেরার প্রকোপ দেখা দেয়। সেই সময় তিনি একবস্তা গম পিষে আনার নির্দেশ দেন। সেই আটার একমুঠো তুলে গ্রামবাসীদের বলেন, পুরো আটা গ্রামের চারপাশে ছড়িয়ে দিতে। তারপর নাকি, আর কলেরার প্রকোপ গ্রামের মধ্যে সেভাবে প্রভাব ফেলেনি।
সাইঁবাবা ভক্ত ছড়িয়ে রয়েছেন সারা বিশ্বজুড়ে। আমেরিকা, কিউবা, কেনিয়া, কানাডা, পাকিস্তান, নেদারল্যান্ডেও সাইবাবার মন্দির দেখা যায়। মহারাষ্ট্রে শ্রী সাঁইবাবা সংস্থান ট্রাস্ট নামে একটি ধর্মীয় সংগঠন গড়ে ওঠে। তাঁরা শিরডির সাঁইবাবার মন্দিরসহ পুরো কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। এই সংস্থার তরফে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে থাকে।
মন্দির খোলা থাকে
এমনিতে সারা বছরই মন্দির খোলা থেকে ভোর ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। তবে গুরুপূর্ণিমা, দশেরা এবং রামনবমীতে মন্দির সারা রাত খোলা থেকে।
শিরডিতে আর কিকি দেখবেন?
শিরডি সাইবাবা মন্দির ছাড়াও এখানে দেখার জায়গাগুলি হল, দ্বারকা মাই, আব্দুলবাবার কটেজ, লেন্ডিবাগ, গুরুস্থান, খান্দবাদেবের মন্দির।
আরও পড়ুন
মহাকালেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের ইতিহাস
ওমকারেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের ইতিহাস
ত্রিম্বকেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের ইতিহাস
ভীমাশঙ্কর জ্যোতির্লিঙ্গের ইতিহাস
ঘৃষ্ণেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের ইতিহাস