অর্বিট ডেস্ক– রাতের দুরপাল্লার ট্রেন। স্লিপার ক্লাস। রাতের আহার সেরে, একটা লম্বা ঘুমের আচ্ছন্নে রয়েছেন। ট্রেন দৌড়চ্ছে দ্রুত গতিতে। কিন্তু সকালে ঘুম যখন ভাঙল, তখন চক্ষু চড়কগাছ। গোটা বগি তন্ন তন্ন করে খুঁজেও লাগেজ পাচ্ছেন না।
এই ঘটনা যাঁদের সঙ্গে ঘটে, তাঁরা বোঝেন ঠিক সেই সময় মনের মধ্যে কী তোলপাড় চলে। আর তার মধ্যে জামা কাপড়ের সঙ্গে যদি দামি কিছু জিনিস থাকে, তাহলেতো কথাই নেই।
একটা সময় ছিল, ট্রেনে লাগেজ লিফ্ট, ডাকাতি, চুরি ছিল নিত্যকার ঘটনা। এখন যদিও পরিস্থিতি বদলেছে। নিরাপত্তা আগের থেকে অনেক বেশি আঁটোসাঁটো হয়েছে। অনেকটাই স্মার্ট হয়ে গিয়েছে ট্রেন জার্নি। তবু ভারতের বেশ কিছু অঞ্চল রয়েছে, যেখান দিয়ে ট্রেন গেলে চুরি বা লাগেজ লিফ্টের ঘটনা ঘটে।

আর এই ঘটনা ঘটার পরেই, দ্বিতীয় যে ঝামেলাটি সব থেকে বেশি পোহাতে হয়, তা হল, পুলিশের অসহযোগিতা। অনেকেই আছেন, যাঁরা ট্রেন জার্নি করেন, কিন্তু সামান্য কিছু জ্ঞানের অভাবে হেনস্থার মুখে পড়তে হয়। যেমন রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স (আরপিএফ) RFPএবং গভর্নমেন্ট রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) GRP এর পার্থক্য জানেন না। ফলে অনেকেই তুলকালাম শুরু করেন, আর পি এফের নামে।
এরপর থাকে জুরিশডিকশন অর্থাত এলাকা। কোন এলাকায় চুরি হয়েছে, সেটা বুঝে অভিযোগ জানানো। আরে বাবা, রাতের ট্রেন জার্নিতে কোথায় চুরি হয়েছে, কোন সময়ে চুরি হয়েছে, এটা জানতে পারলেতো পুলিশের সাহায্যের প্রয়োজনই ছিল না! অথচ এটা নিয়েই চলে পুলিশি হয়রানি।
ধরা যাক, আপনার রাতের ট্রেন জার্নিতে তিনটি রাজ্যের সীমা দিয়ে পার হয়েছে ট্রেন, তারই কোনও এক জায়গায় চুরু হয়েছে, তখন জটিলতা আরও বাড়ে। কোন রাজ্যের জি আর পি তদন্ত করবে, এটা নিয়েই চলে পাসিং দ্যা বাক খেলা। আর আম পাবলিকের কপালে থাকে লবডঙ্কা।

তবে সময় বদলেছে, নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো হয়েছে, সেই সঙ্গে বদলে গিয়েছে, চুরির কৌশল। আগে, চোরেরা ইচ্ছেমতো টার্গেট স্টেশনে উঠে, লাগেজ সরিয়ে দিয়ে স্টেশনে নেমে পড়তো। এখন স্টেশনে স্টেশনে সিসিটিভি ছয়লাপ, ফলে চোরেরাও রীতিমতো রিজার্ভেশন করে ট্রেনে উঠে অপারেশন চালায়।
এতো সবের মাঝে, আপনি নিজেই হয়ে উঠতে পারেন, ব্যোমকেশ বা ফেলুদা। নিশ্চিন্তে ট্রেনে ঘুমোলেন, আবার পুলিশকে হাতের সামনে প্রামাণ্য তথ্য দিয়ে বলেও দিলেন, এইখানে আছে চোর, এবার ব্যবস্থা নিন। বিষয়টা কেমন হয়!
হ্যআঁর হাইটেক যুগে, আপনিও হাইটেক গেজেট ব্যবহার করে আপনার লাগেজের সুরক্ষা নিজেই নিশ্চিত করতে পারেন। কীভাবে সম্ভব, সেটার দিকে নজর রাখা যাক।
SPY Mini GPS Tracking Finder Device Tag
এটি অত্যন্ত ছোট একটি ট্যাগের মতো দেখতে। লাগাজের মধ্যে ওপর দিকে কোথাও লুকিয়ে রেখে দিন। তবে, এটি অ্যাক্টিভ করার আগে, নিজের মোবাইলে পেয়ার করে নিন। ফলে আপনি নিজের মোবাইলেই দেখে নিতে পারবেন আপনার লাগেজ কোথায় আছে?
এটি কেনার আগে ভালো করে দেখে নেবেন, এর ডিসটেন্স কত। মানে এর রেঞ্জ কতদূর পর্যন্ত কাজ করে। কারণ বাজারে এমন অনেক প্রোডাক্ট রয়েছে, যা নির্দিষ্ট রেঞ্জ পর্যন্ত দেখে যায়। রেঞ্জের বাইরে গেলে মিসিং।

GPS SIM Tracking
তবে তবচেয়ে জনপ্রিয় সিম ট্র্যাকার ডিভাইস। এটির মধ্যে একটি সিমকার্ড দেওয়া থাকে। এটি অত্যন্ত ছোট একটি বক্স মোবাইলের মতো। কথা বলা যায় না। তবে ওই সিমের ফোন করলে অটো অ্যক্টিভ হয়ে যায় ও কথা শোনা যায়। ফলে এই যন্ত্র চুপচাপ পদচিহ্ন ছাড়তে ছাড়তে যায়। আর এখন পুলিশ আধ ঘণ্টার মধ্যে লোকেশন বের করে দিতে পারে। যেমন একটি মোবাইল হারিয়ে গেলে আর তা চালু থাকলে যেমন ধরা সম্ভব ঠিক তেমন।
আপনারা অনেকেই হয়তো ভাবছেন, চোরেরা কি এই যন্ত্রকে এমনি রেখে দেবে? উত্তর হল না। চোরেরা মোবাইল চুরির পর, সঙ্গে সঙ্গে তা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু এক্ষেত্রে লাগেজ সরানোর পর, তারা নিরাপদ স্থানে পৌঁছনোর পরেই লাগেজ খুলতে পারে । ততক্ষণ পর্যন্ত যদি আপনার ডিভাইস কাজ করে, তাহলে তাদের কুকর্মের আড্ডাখানার লোকেশনও পাওয়া যাবে। ফলে দ্রুত চোর ধরাও পড়বে।