Breaking News

চলুন বেড়িয়ে আসি এমন এক প্রচীন দেবস্থানে, যেখানে গেলেই কাটে জীবনের সঙ্কট

এ পৃথিবীতে এমন কোনও মানুষ নেই, যাঁদের জীবনে সঙ্কট আসেনি বা আসবে না। কারণ প্রত্যেকটি প্রাণীর জীবনচক্রের মধ্যেই রয়েছে সঙ্কটের পাহাড় আর তার কৃতকর্মের অস্তিত্ব। হতে পারে, এ জন্মে যাঁদের জীবন সঙ্কটহীন হিসেবে কেটেছে, পরজন্মে তাদের জীবনে সঙ্কট আসবে না।

অনেকে মনে করেন, ইউলোক বা পরলোক বলে কিছু নেই। একটাই জীবন, তাই তার হিসেব নিকেশ এ জীবনেই শেষ হয়ে যায়। ফলত, পাপ, পূণ্য বিচার করার কেউ নেই। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত তথাকথিক বিজ্ঞান মনস্ক ব্যক্তিবর্গ বা নাস্তিকদের বিচারধারা আমাদের সমাজে প্রভাব বিস্তার করেছিল, বা এখনও কিছুটা করে যাচ্ছে। কিন্তু ইদানিং সামাজিক মাধ্যমগুলি যদি ভালো করে লক্ষ্য করে থাকেন, দুনিয়ায় ঘটে চলা এমন বহু কিছু চিত্র আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে, যা হয়তো অবিশ্বাস্য ছিল।

যেমন ধরুণ, একটি বানর, দেবস্থানে এসে শান্ত হয়ে বসে পুজো উপভোগ করছে। একটি কুকুর, শ্রীকৃষ্ণ কীর্তনের তালে সাধারণ ভক্তদের সঙ্গে নেচে যাচ্ছে। একটি ছাগল, তার শরীরের তুলনায় বড় একটি ষাঁড়ের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। একটি মুগরি, একটি বিড়ালের সঙ্গে লড়াই করে তাকে পরাস্ত করছে। একটি ব্যাঙ, একটি সাপকে কীভাবে নাস্তানাবুদ করছে।  অর্থাৎ যে চিত্র গুলি ফুটে আসছে, তা প্রথাগত বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাকে ভেঙে চুরে একাকার করে দিচ্ছে। এখানে এই উদাহরণগুলি দেওয়ার অর্থ হল, এই পৃথিবীতে ঘটে চলা বহু প্রাকৃতিক কর্মকাণ্ড যা তথাকথিত আধুনিক যুক্তিবিজ্ঞানের ঊর্ধ্বে। তাই ঈশ্বর আছে কি নেই, তার কর্মকাণ্ড ঠিক কেমন, তা সাধারণ যুক্তিবিদ্যায় ধরা পড়ে না। এটি উপলব্ধীর বিষয়। আপনি অনুভব করবেন, আপনার জীবনে, কোন ঘটনার পর, কী পরিবর্তন আসছে। তাই অন্যেক কথা বা প্রভাব নয়, প্রকৃতি আপনাকে কীভাবে বার্তা দিচ্ছে এবং সেটি আপনি কীভাবে উপলব্ধী করছেন, সেটাই মূল বিষয়বস্তু।

পৌরাণিক কথা নাকি বাস্তব উপলব্ধী

আমরা অনেকেই মনে করি, ভারতের প্রাচীন পৌরাণিক কাহিনীগুলি নিছকই গল্পকথা। ছেলেভোলানো গল্প। কিন্তু গভীর ভাবে যদি সেগুলি পাঠ করেন, তাহলে বুঝতে পারবেন, সাংকেতিক ভাবে সেই সমস্ত গ্রন্থে রয়েছে, নৈতিক শিক্ষার পাঠ, ভবিষ্যতে ঘটতে চলা এমন কিছু ঘটনার অশনি সঙ্কেত, যা আপনার জীবনে বদলে দিতে পারে নানা খাতে।

অনেকেই একটি দ্বন্দ্বমূলক কথা বলে থাকেন। কিছু মানুষ বিশ্বাস করেন, কপালে যা লেখা আছে, তাই হবে। একটা অংশ মনে করেন, নিজের ভাগ্য নিজে রচনা করতে হয়, আরও একটা অংশ রয়েছে, যাঁরা বলে থাকেন, ভাগ্য বলে কিছু হয় না। এই সমস্ত কথাই সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত অনুভব বা পরিবার থেকে পাওয়া শিক্ষার অংশ। কিন্তু চিরাচরিত সত্যটি হল, মানুষ নিজের ভাগ্য নির্মাণ করে, কৃতকর্ম ও সিদ্ধান্তে। কিন্তু ঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন কীভাবে? এবং তার ঠিক কর্ম করবেন কীভাবে? তার জন্য নিরন্তর পরীক্ষা নেন স্বয়ং প্রকৃতি। সেই প্রকৃতির বার্তা বুঝতেই, প্রয়োজন প্রকৃতির সাধনা। যেমন অঙ্ক পড়া, বোঝার সঙ্গে জরুরি নিরন্তর কষার অভ্যাস, তেমনই জীবনকে বুঝতে প্রয়োজন নিরন্তর প্রকৃতির সাধনা। নয়তো জীবনের অঙ্ক ভুল হতেই থাকবে।

শনিদেব কর্মফলদাতা

ঈশ্বর এক, অদ্বিতীয়, সচ্চিদানন্দ, নিরাকার। কিন্তু তার অংশ দেবতা বহু, অনেকটাই আমাদের শরীরের মতো। শরীরের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ রয়েছে, তাদের ভিন্ন কর্মকাণ্ড ও ধর্ম রয়েছে। তেমনই প্রাণবায়ু, আত্মা এক, তার কোনও আকার নেই, লিঙ্গ নেই, বর্ণ নেই, নিরাকার। সেটি ত্যাগ করেই সচল শরীর অচল হয়ে ওঠে।

এক ঈশ্বর যখন বহু দেবতার সৃষ্টি করেছেন, তাদের তেমন, নিজস্ব শক্তি ধারণ করেন। সূর্যপুত্র শনিদেব তেমনই এক দেবতা, যিনি এই জীব জগতকে কর্মফল দান করেন। তাঁর শরণ নিলেই কেটে জীবনে বড় বড় সঙ্কট। তিনি এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেন, যাঁর থেকে বদলে যায়, পথের বাঁক। কঠিন পথ, সরল হতে শুরু করে।

যেতে পারি, কিন্তু কেন যাব?

ভারতের পৌরাণিক ও প্রাচীন লোককাহিনী থেকে জানা যায়, এই দেশে দুটি বড় শনি মন্দির রয়েছে। একটি মহারাষ্ট্রের শনি সিগ্নাপুরে এবং দ্বিতীয়টি মধ্যপ্রদেশের মোরেনা জেলায় শনিচ্ছরা মন্দির। আপনি যদি জীবনের সঙ্কটময় পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে চান, তাহলে দুটি মন্দিরেই আপনাকে যেতে হবে। না যখন খুশি, তখন গেলাম, ঘুরে এলাম বা চলো একবার ঘুরে দেখেই আসি, এমন একটা ভাব নিয়ে গেলে হবে না। কিছু সরল বিধি মেনে আপনাকে প্রস্তুতি নিয়ে যেতে হবে। ভালো করে বুঝে নিন, আপনি পড়াশুনা না করে, যদি পরীক্ষা দিতে যান, যেমন হবে, তেমন বিধি মেনে না গেলে, ফল পাবেন না। তাই, সবার আগে সহজ সরল বিধিগুলি মেনে নিন।

আরও পড়ুন- ইতিহাসের পাতায় এক অধ্যায় সোমনাথ মন্দির

গমণের পূর্বে বিধি পালন

১। সফরের অন্তত এক সপ্তাহ আগে থেকে নিরামিষ ভোজন করতে হবে। (পরিবারের যাঁরা যাবেন)

২। কোনওরকম ব্যক্তির সঙ্গে ঝগড়া, মনোমালিণ্য, কটূকথা বলা যাবে নায যে কোনও নেতিবাচক পরিস্থিতি এড়িয়ে চলতে হবে।

৩। প্রতিদিন সকালে অন্তরে একটি প্রার্থনা করতে হবে, আজকের দিনটি যেন শুভ হয়।

যাত্রার সময়

১। যাত্রার আগে, একটি সঙ্কটমোচন শনিযন্ত্র ( বাজারে পাওয়া যেকোনও যন্ত্র নয়) তৈরি করিয়ে নিতে হবে। সেটি লাল কাপড়ে মুড়ে গোপনে নিজের লাগেজে রাখতে হবে।

২। পুজো দিতে যাওয়ার সময় সেই যন্ত্রটি শুদ্ধ করিয়ে, বীজমন্ত্র লিখিয়ে নিতে হবে। এবং ব্যক্তি অনুসারে বিধি প্রস্তুত করিয়ে নেবেন।

৩। যন্ত্রটি, নিজের ঘরে পুজোস্থানে রেখে দেবেন এবং দৈনিক দশবার অন্তত বীজমন্ত্র পাঠ করবেন। পাঠের পর, যন্ত্রটি পরিষ্কার লাল কাপড়ে মুড়ে রেখে দেবেন। (মন্দিরের পুরোহিত যেভাবে নির্দেশ দেবেন, সেগুলি ফলো করবেন)

৪। আপনাকে ভারতের দুটি প্রচীন শনি মন্দিরই যেতে হবে। এমনকী সঙ্কট কাটছে, পরিস্থিতি নিজের অনুকূলে হচ্ছে, এটা অনুভব করার পরেও। তবে, কোনটিতে আগে যাবেন বা পরে, বা কতদিন পরে যাবেন, তার শুভ দিন বিচার করিয়ে নেবেন। সবচেয়ে ভালো হয়, দুটি মন্দিরে যে বিশেষ মেলা হয়, সেটি সর্বোত্তম।

৫। ব্যক্তি অনুসারে কিছু ভিন্ন সরল বিধি দেওয়া হয়, সেগুলি নিয়মিত পালন করতে হবে।

বিশেষ দিন

শনি সিগ্নাপুর- 27 May 2025  Time 6.00am 11.00pm

শনিচ্ছরা 29 March 2025 Time 6.00am  11.00pm

**২০২৫ সালের ধর্মীয় স্থান সফর ও পুজো সংক্রান্ত সফরের বুকিং শুরু হয়েছে।

এই শনিমন্দির যাত্রাসহ দেশের প্রাচীন ধার্মিক স্থান দর্শন ও পুজো সংক্রান্ত বিশেষ তথ্য পেতে ভারত ও বাংলাদেশের হিন্দু নাগরিকরা হোয়াটস অ্যাপ করুন +91 9073503958

আমাদের চ্যানেলে যুক্ত হয়ে যান

About Orbit News

Check Also

অযোধ্যার রাম মন্দির: ইতিহাস, কিংবদন্তি ও এক মহামন্দিরের পুনর্জন্ম

অযোধ্যা, যা হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলোর অন্যতম পবিত্র স্থান, ভগবান শ্রীরামের জন্মভূমি হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। এখানে নির্মিত শ্রীরাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!